শাহেদ ধীরে ধীরে চোখ খুলল। চোখ খুলে সে যা দেখল তা এক কথায় ভয়ংকর। সে শুয়ে আছে তাদেরই মেডিকেল কলেজের এনাটমি ল্যাবের ডিসেকটিং টেবিলের উপর। এই টেবিলে মানুষের শরীর ব্যবচ্ছেদ করা হয়, কাটা ছেড়া করা হয়।
শাহেদের মাথার উপর উজ্জ্বল আলোর কতগুলো বাতি জ্বলছে। সেই আলোতে সে তার ডান পাশে মতিকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখল। মতির হাতে ছুরি, কাঁচি, ফরসেপসহ লাশ কাটার নানারকম অস্ত্রপাতি। সে সেগুলো ডিসেকটিং টেবিলের উপর সাজিয়ে রাখছে। শাহেদ মুখে কিছু বলতে চেষ্টা করল, কিন্তু পারল না। তার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে আছে, গলা দিয়ে কোনো শব্দ বের হচ্ছে না। শরীরের শক্তিও নিঃশেষ প্রায়। কোনোমতে মাথাটা তুলতে পারলেও শরীরের অন্য কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সে নাড়াতে পারছে না। এমন কী হাত পায়ের আঙ্গুল পর্যন্ত না। তার মনে হচ্ছে শক্তিশালী চেতনানাশক এর সাহায্যে তার গলার উপরের অংশ ছাড়া সমস্ত শরীরকে অবশ করে রাখা হয়েছে, অথচ অনুভূতি ঠিকই আছে। তা না হলে সে কখনও ঠান্ডা অনুভব করত না। আর এই অনুভূতি থাকার কারণে শরীর ব্যবচ্ছেদের ভয়ংকর নারকীয় যন্ত্রণাটা তাকে ভোগ করতে হবে। কারণ মতি যখন তার শরীরে ছুরি চালাবে তখন অনুভূতি থাকার জন্য ব্যথাটাকে সে কোনোভাবেই উপেক্ষা করতে পারবে না। এরকম ভাবতেই শাহেদের বমি বমি ভাব এলো। কিন্তু সে বমি করতে পারল না। কারণ ততক্ষণে মতি তার শরীরের উপর ধারাল ছুরি নিয়ে ঝুকে এসেছে।